নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের মদনপুরা গ্রামের ফয়েজ রাজার ছেলে এই সেই কুখ্যাত খুনি রাজিব রাজা বড় চুল রেখে পাগল বেশে চলাই ছিল তার ছদ্মবেশ।সবার সামনে পাগলের মত ভান করে চলতো কিন্তু সে একজন প্রকৃত শীর্ষ সন্তাসী খুনি।এর পিছনে রয়েছে তার পরিবার থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের সহযোগীতা ।মাথায় বড় চুল রেখে সেজেছিল ভিলেন । বিলবিলাস বাজার ও মদনপুরাতে সন্তাসী রাজত্ব করে বেড়াতো এই খুনি রাজিব রাজা।ওর সামনে ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারতো না ।তাহলেই ঘটিয়ে ফেলতো নির্মম নারকিয় ঘটনা ।ইতিপূর্বে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে প্রবাসীকে খুন করে খুনি সাজে সে।তারপর বরিশালে মানুষ অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে সে।যার প্রতিটা মামলা রয়েছে তার । কিন্তু তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজন মাথায় সমস্যা বা পাগল বলে ভুয়া কাগজপত্র আদালতে দেখিয়ে জামিনে আনে।যদিও এই খুনি রাজিব রাজা একসময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করতো।পরে পুনরায় গ্রামের বাড়ি মদনপুরাতে এসে থাকতে শুরু করে।সেখানে থেকেই বাবা ঢাকাতে চাকুরি করার সুবাদে প্রতি মাসে মাসে বাবা এই খুনি ছেলেকে মোটা অংকের টাকা দিতো, সেই টাকা দিয়ে পাগল বেশে বিভিন্ন সত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতো সে।
মদনপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহরাব হোসেন জানান, ২০১৫ সালে এই খুনি রাজিব রাজা বিলবিলাস বাজারে বসে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার উপর নির্মম হামলা করে আমাকে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে ।যদিও আল্লাহ পাক আমাকে এখনও বাচিয়ে রেখেছেন, আমার বাচার কথা ছিল না । পরে ওর বিরুদ্ধে আমি মামলা করলে থানা পুলিশ গ্রেফতার করে হাজতে পাঠায় ।কয়েক মাস পর ওর পরিবার ও আত্মীয় স্বজন মাথায় সমস্যা বলে ভুয়া কাগজপত্র আদালতে দেখিয়ে জামিনে মুক্ত করে আনে।পরে স্থানীয় শালিশ মীমাংসার মাধ্যমে ওর বাবা-মা স্টাম্পে সহি-স্বাক্ষার দিয়ে বিদায় নেয় যে এই ছেলেকে গ্রামে রাখবেনা ঢাকা নিয়া যাবে।কিন্তু দুঃখের বিষয় ছেলেকে তো ঢাকাতে নেয়ই নাই বরং গ্রামে থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়ায় ছেলে তাকে টাকা পয়সা দিয়ে শেল্টার দিয়ে আসছে।যার দরুণ একটি শান্ত ভদ্র ছেলে শাওনকেও খুন করেছে এই খুনি রাজিব রাজা।
বিলবিলাস বাজারের ব্যবসায়ী নাদিম, রফিক, নাসিরসহ আরও অনেকে জানান, এই খুনি কিছুদিন পূর্বে আমাদেরও জালাইছে।ওর কোমরে সবসময় একটি খুর জাতীয় চাকু থাকতো। ওর ব্যাপারে কেউ কিছু বললেই ওই খুর বের করে গলায় অথবা পেটে পোজ মারতো।আমাদের ওই খুর দিয়ে পোজ মেরেছে ।যা অল্পের জন্য দৌড় দিয়ে চলে যাওয়াতে রক্ষা পেয়েছি।আসলেই ও একটা ভয়ংকর ছিল।খুনি রাজিব কোন পাগল নয়।পাগল বেশে চলাফেরা করে সন্ত্রাসগীরি করতো।
খুনি রাজিব রাজার আপন চাচা সেলিম রাজা জানান, আসলে রাজিব কখনই ম্যান্ডেল বা পাগল ছিল না।একদম সম্পূর্ণ সুস্থ্য ছিল সবসময়।তবে সবসময় মাথায় বড় চুল রেখে পাগল বেশে ছদ্মবেশে চলাফেরা করতো।ওরে সম্পূর্ণ টাকা পয়সার জোগান দিত ওর বাবা।মোটা অংকের টাকা পয়সা দিয়ে ডাক্তারি কাগজপত্র করে আদালতে ওরে পাগল সাজাতো।
মদনপুরা ও বিলবিলাসের সাধারন মানুষ সস্তি ফিরে পেয়েছে খুনি রাজিবের গ্রেফতারে কিন্তু তারা দুঃখ করে বলেন, শাওনের মত একটা ভালো ছেলে ওর হাতে জীবন দিতে হয়েছে।
আসলে খুনি রাজিব রাজা একজন কুখ্যাত সন্ত্রাস।ওর বিরুদ্ধে একাধিক খুন, অপহরণের মামলা রয়েছে।খুনি রাজিব এলাকায় পাগল ছদ্মবেশে চলাফেরা করতো।যাতে করে এই খুনি রাজিব আর যেন কোনও প্রকারে কোন ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে জেলহাজত থেকে ছাড়া না পায়, খুনি রাজিব দিব্যি একজন সম্পূর্ণ সুস্থ্য মানুষ ।খুনি রাজিব কোনও পাগল বা মাথায় কোনও সমস্যা নাই ।এভাবে যেন আর কোনও মায়ের বুক খালি না হয় ।আমরা সবাই শাওন হত্যার সর্বচ্চো বিচার খুনি রাজিব রাজার ফাসি চাই, দিতে হবে।
উল্লেখ্য:: গত সোমবার (২৪ আগষ্ট-২০২০ ইং) বাউফলের বিলবিলাস বাজারে একটি হোটেলে উপজেলা ছাত্রদল নেতা ও শিক্ষার্থী মোঃ শাওন খন্দকার (২৩) কে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে এই কুখ্যাত খুনি রাজিব রাজা (২৬)। খুনি রাজিব রাজাকে এঘটনায় থানা পুলিশ আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে
এম.জাফরান হারুন দেশের কন্ঠ ২৪.কম